আকাশ রহমান, স্টাফ রিপোর্টারঃ ঠাকুরগাঁও সদর থানার অন্তর্গত ৭ নং চিলারং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ভেলাজান মহাজন পাড়া নামক গ্রামে গর্ভবতীর পেটে লাথি মেরে গর্ভের সন্তান মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই পাড়ার ১। সামিরুল ইসলাম, পিতা-মৃত রিয়াজউদ্দিন, ২। আমিরুল ইসলাম, পিতা-মৃত রিয়াজউদ্দিন,৩। রুহুল আমিন, পিতা:- আবুল কাশেম ,৪। আশরাফুল পিতা-আবুল কাশেম, ৫। রনি, পিতা-আমিরুল ইসলাম , ৬। আবুল কাশেম, পিতা-মৃত শমসের আলী, ৭। সুভান পিতা-মৃত শমসের আলী ৮।রাশেদা বেগম, স্বামী:- সামিরুল ইসলাম, ০৯। রেখা বেগম, স্বামী:-আমিরুল ইসলাম, সর্ব সাং:- ভেলাজান থানা ও জেলা:- ঠাকুরগাঁও এর বিরুদ্ধে

অভিযোগকারী জবেদা বেওয়া স্বামী মৃতঃ নাসির উদ্দিন (ভিকটিমের) নানী, রাসেল (ভিকটিমের স্বামী) ও তানিয়া আক্তার (ভিকটিম) এদের অভিযোগ মতে, ঘটনার দিন অর্থাৎ ১১/০৩/২০২২ ইং তারিখে সময় আনুমানিক প্রায় রাত ১০.৩০ ঘটিকার সময় সবাই যখন সংসারের কাজকর্ম শেষ করে গভীর ঘুমে ধাবিত হয়। হঠাৎ প্রতিপক্ষ হামলাকারীগণ পূর্বশত্রুতার জেরে সকলে একত্রিত হয়ে অভিযোগকারীর বাড়িতে আচমকা হামলা করে। বাড়িতে তালা মেরে বাড়ির সকলের উপর বেধড়ক মারধর ও পিটানো শুরু করে।

এতে ভিকটিম ও তার স্বামী ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে, বাড়ির পূর্ব পাশে( বাড়ি সংলগ্ন) আমবাগানে তাদের গতিরোধ করে এবং মারপিট শুরু করেন। এতে শরীরে ফুলা জখম ও কালো দাগের সৃষ্টি হয় এবং তাকে গাছের সাথে বেঁধে রাখার জন্য হাত রশি দিয়ে বাধলে ভিকটিম স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, হামলাকারীরা ভিকটিমকে চর থাপ্পর মারতে শুরু করে। ফলে ভিকটিম চিৎকার করে আমি গর্ভবতী আমার পেটে প্রথম সন্তান রয়েছে বললে হামলাকারীগণ ভিকটিমের তল পেটে ও পিঠে সজোরে কয়েকটি লাথি মারে এতে ঘটনাস্থলে ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে যায়।

পরবর্তীতে জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ কল করা হলে ঠাকুরগাঁও সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই বিদ্যুৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।

ভিকটিম ও তার স্বামী আরও অভিযোগ করে বলেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের প্রভাবে আজ ১০ দিন যাবত আমার গর্ভে ধরা প্রথম সন্তানের অকাল মৃত্যুতে মানুষের দ্বারে দ্বারে বিচারের দাবিতে ঘুরেছি। হামলাকারীগণ প্রভাবশালী হওয়ায় আমার বাচ্চার মৃত্যুটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ধামাচাপা দিতে চাই । হামলাকারী কাছে টাকা খেয়ে আমাকে বিচার দিতে অনেকেই নারাজ, আমি আমার গর্ভের সন্তানের অকাল মৃত্যুর বিচার চাই।

এ বিষয়ে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা হলে তারা জানান যে, ভিকটিমের আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দেখে বুঝা যাচ্ছে যে, একটি মেয়ের পেটে বাচ্চা জন্ম হয়েছিল এখন এটা মারা গেছে, বাচ্চার কিছু মহিলার পেটে রয়েছে এটা যে কোন সময় বের হয়ে যেতে পারে। আর বের না হলে জরুরিভাবে d&c করতে হবে না হলে ভিকটিমের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

এ বিষয়ে ঠাকুরের সদর থানার এসআই বিদ্যুতের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে আমি ব্যক্তিগত কারণে ভারতে যাচ্ছি এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার এসআই পীযূষ এর উপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমরা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

অপরদিকে এসআই পীযুষের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।

অপরদিকে ভিকটিমের পরিবারবর্গ বলছেন কয়েক দফা অভিযোগপত্র দিলেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছেন, গরিবের বিচার নেই।

এসে বিষয়ে স্থানীয় সুশীল সমাজের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান যে, ঘটনার বিষয়টি সত্য মেয়েটি বড় অসহায় গত কয়েকমাস পূর্বে তারা প্রেমের সম্পর্কের কারণে এলাকাবাসীর মাধ্যমে বিয়ে হয় এতে তার পরিবার তার সাথে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করে কোন রুপ যোগাযোগ করে না এমন অবস্থায় মেয়েটির বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণে পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সমাজের একাংশ হামলাকারীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন এবং বিচার থেকে ভিকটিমকে বঞ্চিত করতে শলা পরামর্শ ও অবৈধ হস্তক্ষেপ করছেন। আমরা সঠিক তদন্ত করে এর বিচার চাই।

হামলাকারীদের পরিবারবর্গের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন যে, গত ১১ তারিখে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে এতে সামান্য হতাহত হয়েছে তবে ভিকটিমের বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনাটা তারা অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে ৭ নং চিলারং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম শহীদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা শুনেছি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে ৭ নং চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ফজলুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।

এব্যাপারে ঠাকুরগাঁও অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি বিধান চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু বলেন,এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান তারা।